জিএম বেগুনের ১০ বছর: বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে বায়োটেকনোলজির প্রতি জনসমর্থন বৃদ্ধি পাচ্ছে

জিএম বেগুনের ১০ বছর: বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে বায়োটেকনোলজির প্রতি জনসমর্থন বৃদ্ধি পাচ্ছে

বাংলাদেশের কৃষি খাত বর্তমানে বেশ কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশটি আধুনিক বায়োটেকনোলজির ব্যবহার করে ফসলের জিনগত পরিবর্তন আনতে কাজ করছে। বিশেষত, বিটি বেগুন দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চাষকৃত জিনগতভাবে পরিবর্তিত (জিএম) খাদ্য ফসল হিসাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই ধরনের জিএম ফসল সমাজে গ্রহণযোগ্য এবং বাণিজ্যিকভাবে সফল করতে জনমত এবং সচেতনতা একটি বড় ভূমিকা পালন করে।

এই গবেষণায় বিটি বেগুনের প্রতি জনগণের ধারণা, বায়োটেকনোলজির গ্রহণযোগ্যতা, এবং জিএম ফসলের প্রতি উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন বিষয় যেমন, জনগণের মধ্যে জিএম ফসলের বিষয়ে জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়া, গ্রহণযোগ্যতার মাত্রা, এবং উদ্বেগের কারণগুলি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষির টেকসই উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এই গবেষণার ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

দশ বছর আগে জিএম বেগুনের প্রবর্তনের পর, এটির সফলতা এবং সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের কৃষিতে বায়োটেকনোলজি ব্যবহার নিয়ে জনসাধারণের মনোভাব ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়েছে। বর্তমানে, অধিকাংশ কৃষক এবং ভোক্তারা বুঝতে পারছেন যে জিএম ফসল শুধুমাত্র ফসলের উৎপাদন বাড়াচ্ছে না, বরং এর সঙ্গে সঙ্গে এটি পোকামাকড়ের আক্রমণ কমাতে এবং কীটনাশকের ব্যবহার হ্রাস করতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এই পরিবর্তনের ফলে কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাবও কমানো যাচ্ছে।

গবেষণা দেখিয়েছে, বিটি বেগুন সম্পর্কে সঠিক তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার পর জনগণের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। এমনকি যারা প্রথমে বায়োটেকনোলজির প্রতি সংশয় পোষণ করতেন, তারাও ধীরে ধীরে এর সুফল সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করছেন। তবে, এখনও অনেক মানুষ জিএম ফসল নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন, বিশেষত এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে। সঠিক গবেষণা এবং তথ্যের ভিত্তিতে এই উদ্বেগগুলো দূর করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে বায়োটেকনোলজির প্রয়োগ বাড়ানোর জন্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত ব্যাপকভাবে জনমত গঠন করা এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এভাবে, দেশের কৃষি ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।